একটা হলুদ গোলাপ || মুনীরা কায়ছান

149

গলার স্বরটা ভীষণ রকম বাজে হয়ে যাবার পর থেকেই আমার আলাদা মনোযোগ মেলে এই ক্যাফেতে এলে। ইশারায় কাজ চলে যায় বেশ। আমি ফুডফ্রিক না। খাবার নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট আমার কাজ না। যেটা আমার স্বাদগ্রন্থিকে সন্তুষ্ট করে সে খাবারের স্বাদ মেমোরিতে জায়গা করে নেয়। রোজ চিকেন বান আর ম্যাপল কোল্ড কফিই আমি অর্ডার করি এখানে এলে। একঘেয়েমি কাটাতে মাঝে মাঝে মেন্যুটা বদলে চিকেন টোস্ট হলেও শীত গ্রীষ্ম সবসময় আমার ম্যাপল কোল্ড কফিই চলে।
রেস্টুরেন্টটায় আমি আসি সকাল আর দুপুরের মাঝামাঝি সময়ে। কারণ এখানে রোদের অদ্ভুত একটা খেলা চলে। আমার রোদ ভাল লাগে। খুব সকালে নাগরিক মানুষগুলোর ভীষণ ব্যস্ততা যেন সূর্যকেও আঁকড়ে ধরে৷ তাই সে সময়টা এড়িয়ে দুপুরের রোদ তীব্র হবার আগ পর্যন্ত আমি এখানে বসে থাকি। প্রায় রোজই আসা হয় এখানে। তবে মাস দুয়েক আগে আমি আবিষ্কার করলাম শুধু রোদের টানে এখানে আসি তা নয়-নরম রোদ ছুঁয়ে থাকে উত্তরের যে টেবিল তাতে বসে থাকা এক ঝলক মেঘের টান রোদপ্রেমের জায়গাটা দিন দিন প্রতিস্থাপন করছে।

থাইরয়েড গ্ল্যান্ডে একটা গ্রোথ ছিল আমার। সেটা থেকে নিস্তার পেতে ছুরির নিচে যেতে হয়েছিল আমাকে। গ্রোথটা রিকারেন্ট ল্যারিঞ্জিয়াল নার্ভ জড়িয়ে ছিল। তাই আর শেষ রক্ষা হয়নি। ডাক্তার কাজিন সবটা বুঝিয়ে দিয়েছিল জলবৎ তরলং করে। আমার আকর্ষণীয় রমণীমোহন স্বরের অপমৃত্যু মেনে নিতে হয়েছে তারপর থেকেই৷ বোবা মানুষ শুনতে অক্ষম হলে অবাক হবার কিছু নেই। বরং বোবা লোক শুনতে পাওয়া বিড়ম্বনার জন্ম দিতে পারে। তাই পুরোপুরি বোবা না হলেও মূক-বধির হয়ে থাকি লোকালয়ে। বেঁচে যাই অনেক অবান্তর পরিস্থিতি থেকে।

আজ সোমবার। যেহেতু আমি চাকরিজীবী নই এবং একটা ভারিক্কি গোছের সফটওয়্যার কোম্পানিতে আমার শেয়ার আছে বলে মাসটা আদিখ্যেতা এবং বিলাসিতায় বেশ কেটে যায়। আর তাই আমি সময় অপচয় করতে দ্বিধা রাখি না। তবে কণ্ঠের প্রায় মৃত্যু হবার আগ পর্যন্ত আমি শখের গায়ক ছিলাম। বেশ ভাল গান গাইতাম বলে অনেক রেস্টুরেন্টে আমি লাইভ শো করতাম। স্রষ্টার খেলতে ভাল লাগে নিজের সৃষ্টি নিয়ে-তাই আমায় দেয়া উপহার ফিরিয়ে নিতে তার বিন্দুমাত্র দ্বিধা হল না। বসেছিলাম আমার সবসময়ের সময় কাটানোর জায়গায়। আজ আকাশের মন ভাল নেই। গ্রীষ্মের দিন বলে রোদটা বেলা ঠিকভাবে এগুবার আগেই কেমন রগচটা হয়ে গেছে। আঁচটা গায়ে লাগছে বড্ড বেশি। আমি কিছুটা অস্থির। এখন অবধি মেঘ ভর করে চলা নারীটি আসেনি।

আমার টেবিল থেকে ওয়েটারের হাতে করে মাসখানেক ধরে রোজ একটি করে হলুদ গোলাপ মেয়েটির টেবিলে পাঠাই আমি। মেয়েটিকে প্রথম দেখি দুমাস আগের কোন এক সকালে। ভারি চশমাটা চোখজোড়া আড়াল করেছিল তবু আমি ঠিক বুঝতে পেরেছি চোখজোড়ায় আছে আকর্ষণ। তারপর শান্ত মেয়েটিকে দেখতে দেখতে আমার কেন যেন মনে হল তার সাথে কথা বলতে কণ্ঠস্বর জরুরি না। আমি তার চোখের সীমানায় অবলীলায় লিখতে পারব আমার যত কথা।

মেয়েটি ফুল পেয়ে সবসময় আমার টেবিলের দিকে তাকায় কিছুক্ষণ । তারপর সামনে থাকা কখনো চিকেন বান কিংবা কখনো চিকেন টোস্টের সাথে একটা ম্যাপল কোল্ড কফি খেয়ে চলে যায়। মেয়েটার সাথে আমার খাবারের পছন্দ এমন মিলে যাবে বুঝিনি। মেয়েটি চলে যাবার পর ফুলটা আমি ফেরত নিয়ে আসি। গলার স্বরটা আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা না করলে একটা গান গেয়েই ফুল দেয়া হত হয়ত। কিন্তু হয় না। আমি রোজ হলুদ গোলাপটা তার হাতে দেখতে চাই। পারি না। তার চশমার মোটা কাচ ভেদ করে গোলাপ দেখে ভালবাসা জেগে ওঠাটা আমি দেখতে চাই খুব করে। পারি না। চশমার ওপাশ থেকে নিরাসক্ত দৃষ্টি ছুঁড়ে সে চলে যায়।

হলুদ গোলাপ দেবার একটা ছোট্ট কারণ আছে। যদিও লাল রঙের তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি, হলুদ রঙের পেরিফেরাল ভিশন লালের চেয়ে প্রায় ১.২৪ গুণ বেশি। আলো কম হলেও হলুদ গোলাপ দৃষ্টি থেকে হারাবার কোন সুযোগই নেই। মেয়েটির অবতল লেন্স পরা ক্ষীণদৃষ্টির চোখ সহজে সে রং দেখবে বলে গোলাপরাণীর হলুদ রংটাই বেছে নিয়েছিলাম। তবে মেঘনারীর সুদৃষ্টি এখনো সে লাভ করতে পারেনি। হয়ত একদিন পারবে। লাল গোলাপ ভাবছি দেব আরো কিছুদিন পরে। একবার অন্তত হলুদ গোলাপ ছুঁয়ে আমায় ধন্য করুক এই বেখেয়ালি নারী।
রেস্টুরেন্ট থেকে বেরুবার পথটা একটু উঁচুনিচু। অসমান টাইলস কার্পেট বিছিয়ে সমান করার একটা চেষ্টা করা হয়েছে। মেয়েটির ক্ষীণদৃষ্টি তা ধরতে পারে না। আমি প্রায়ই দেখি মেয়েটা হোঁচট খায়। আমার তখন খুব ইচ্ছা হয় মেয়েটির হাত ধরে বলি, ” আমি আছি”। একদম আটপৌরে গড়নের মেয়েটি যখন আমার সামনে দিয়ে চলে যায়, আমি তখন অনুভব করি বসন্তকে বিদায় দিতে থাকা ফুলের কষ্ট। আমি তাকে বলতে পারি না- ” শুনছ মেঘের মত নারী-আমার একটু ছায়া দরকার”। আমি আবার সকালের অপেক্ষায় থাকি-রোদ যেমন থাকে মেঘের অপেক্ষায় …

মেঘের প্রার্থনা

আগে আমি রোজ বিকেলে কফি খেতে আসতাম। এই ক্যাফেতে চিকেন বান বেশ ভাল বানায়। এক বিকেলে ওদের খুব টান পড়ে গেল কাস্টমার বেশি বলে। একটাই বান অবশিষ্ট ছিল। সেটা নিয়ে এক ভদ্রলোকের সাথে আমায় যুদ্ধে নামতে হল। যদিও ভদ্রলোক নিপাট ভাল মানুষের উদাহরণ। সে চিকেন বানটা কোন বাকবিতণ্ডা ছাড়াই দিয়ে দিল আমায়। যদিও সে আগে পে করেছিল আর ওয়েটারকে মুখে আমি আগে অর্ডার করেছিলাম। পরে বুঝলাম লোকটা কথা বলতে পারে না। আমার হঠাৎ করে ধাক্কা লাগল যেন। অচেনা একজন মানুষের স্বর না থাকা আমার নিজের ক্রমশ অন্ধ হবার ব্যাপারটাকে ছাপিয়েও গুরুতর হয়ে উঠল যেন। আমার প্যাথোলজিক্যাল মায়োপিয়া আছে। চোখের দর্শনক্ষমতা ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। কোন কারণ নেই। কিংবা থাকলেও প্রচলিত পরীক্ষা-নিরিক্ষায় ধরা পড়ছে না। বছর বছর ভারি হচ্ছে কেবল চশমাটা। কর্নিয়া বেশি পাতলা আমার। আর বছর বছর পাওয়ার বদলালে ল্যাসিক করানো যায় না। সবার চোখের সামনে আমি অন্ধ হয়ে যাচ্ছি। ডাক্তার অবশ্য আশার কথা শুনিয়েছেন এই বলে যে চোখের এই অদ্ভুত ব্যবহার একটা সময় আপনাতেই থেমে যাবে। তবে চশমার সাথে ঘটে যাওয়া যোগ আর বিয়োগ হবার জো নেই।
কৃতজ্ঞতা বা করুণা যেটাই হোক -আমি রেস্টুরেন্টে এলেই লোকটাকে খুঁজতাম। বিভিন্ন সময় এসে বুঝতে পেরেছি লোকটা ঠিক কোন সময় আসে। তাই সময় দেয়াটা কঠিন হয়নি তেমন। আমার পড়াশোনাটা চলছে ঢিমেতালে।

একটা দুটো ক্লাস কোনরকম করে ক্যাফেতে চলে আসি। ডাক্তার আশ্বাস দিয়েছেন চশমা দিয়ে সব রকম পড়াশোনাই চালিয়ে যেতে পারব আমি। অবশ্য আমার ডাক্তারের কথা বিশ্বাস হয় না। আমার প্রবল ধারণা আমি পুরোপুরি অন্ধ হয়ে যাব। একটা বেসরকারি ভার্সিটিতে আমি বিবিএ পড়ছি। আজকাল অডিও বুক শোনার অভ্যেস করছি। ভাল লাগে আমার। একসময় এসবেই অভ্যস্ত হতে হবে হয়ত। যেমন অত্যন্ত সুদর্শন ত্রিশোর্ধ্ব পুরুষটিকে পৃথিবীর সকল শব্দ উচ্চারণ বিদায় জানাতে হয়েছে সারাজীবনের জন্যে। লোকটা অবশ্য কানে শুনতে পায়। আমি একবার পড়ে যাবার সময় শব্দ হওয়ায় তাকিয়েছিল পিছু ফিরে। আমি লোকটাকে তেমন কিছুই বলতে পারি না। বলতে পারি না তাকে দেখার জন্যে আমি এতক্ষণ বসে থাকি। ক্যাফে থেকে বেরুবার যে কার্পেট বিছানো অসমান করিডোর, সেখানে আমি প্রায়ই হোঁচট খাবার ছোট একটা চেষ্টা করি। লোকটা আশেপাশে থাকলেই করি অবশ্য। যদি লোকটা বুঝত আমি কত করে চাই পড়ে যেতে থাকা আমাকে সর্বশক্তি দিয়ে আগলে রাখুক সে। মানুষটা সেসব দেখে না। আমি চশমা দিয়েও দূরে অত ভাল দেখি না। তবে রোজ আমি এলেই ওয়েটার আমার টেবিলে একটা হলুদ গোলাপ দিয়ে যায়। আমার খুব বিরক্ত লাগে।
আমি বেশ পড়ুয়া ছোটবেলা থেকেই। লাল গোলাপ প্রেম ভালবাসার প্রতীক। আর সাদা গোলাপ সব ভুলে নতুন কিছু শুরু করার আমন্ত্রণ জানায়। হয়ত তাই বিয়েতে সাদা গোলাপের এত চাহিদা বাইরের দেশগুলোয়। কিন্তু হলুদ গোলাপ তো বন্ধুত্ব বোঝায়। লোকটা কি আমায় বন্ধু বানাতে চায়! আমি মোটেই এত সুন্দর একটা মানুষের শুধু বন্ধু হতে পারব না। আমার তাকে বন্ধু এবং বর দুটো হিসেবেই চাই। আমরা জোছনা দেখব একসাথে, আমার ক্রমশ কমে আসা দৃষ্টি দিয়ে আমি ঘোলাটে চাঁদ দেখে তাকে বলব আমি তাকে জোছনার মত ভালবাসি। সে উত্তরে কিছু বলতে পারবে না। কিন্তু তার চোখ দেখে আমি বুঝে নেব ওই চোখে এক জোছনা ভালবাসা আটকা পড়ে আছে। কবে আসবে এমন জোছনা?

তৃতীয় নয়ন

শ্যামবরণ অপূর্ব চোখের মানুষটা রোজ আসে আমার দোকানে। তার নামটা জানতে বেশ খোঁজখবর করতে হয়েছে আমার। নাম অনিকেত। আমি সীমানা। ছাদে আমার গোলাপের বাগান। অসম্ভব সুন্দর সব গোলাপ ছড়িয়ে আছে পুরো ছাদ জুড়ে। শখের বশেই ফুলের দোকান দিয়েছি নিজেদের বাসার নিচতলায়। বাগানের ফুলের সাথে অন্য জায়গা থেকে আনা ফুলও থাকে। আমি লোকটার নাম জানতে চেয়েছিলাম বেশ কবার। লোকটা কিছু না বলে গম্ভীরমুখে চলে যায়। প্রতিদিন একটা করে হলুদ গোলাপ কিনে নিয়ে যায় সকালে। আবার ফেরত নিয়ে আসে দুপুরবেলায়। বাসা এদিকেই হয়ত৷ আসা যাওয়া দুটো পথেই তাকে দেখি আমি। মাঝে মাঝে সন্দেহ হয় লোকটা হয়ত কথা বলতে পারে না। কিন্তু যারা মূক তারা তো বধির হয়। এই লোক দিব্যি শুনতে পায়। কানে প্রায়ই হেডফোন থাকে। আচ্ছা এমন কী হতে পারে ফুলটা সে রোজ আমার জন্যেই আনে। সংকোচ তাকে আঁকড়ে রাখে। আমার খুব করে মনে হয় লোকটা আমাকে পছন্দ করে। আমার দিকে যখন তাকায় আমার ভীষণ ভাল লাগে। প্রেম না থাকলে কারো চোখ এত সুন্দর মনে হত না। এত সুন্দর চোখ হতে হবে কেন তার? আমি যেন ঘুমের মধ্যেও দেখি ওই দৃষ্টি। আমি এই লোকটাকে ভালবেসে ফেলছি মনে হয়৷ উদ্ভ্রান্তের মত রোজ তার অপেক্ষায় থাকি। আমিই একটা লাল গোলাপ দিয়ে তাকে খুব জলদি বলে দিব ভালবাসি। সেদিন আমি জানি পৃথিবীর কোন ফুল ঝরে যাবে না-এতটা ভালবাসা থাকবে বাতাসে…

নেপথ্যের কথন

আমার নাম সাইফুল ইসলাম কিন্তু অমন নাম পাঠকদের আগ্রহ জাগায় না। তাই ছদ্মনামে লিখি আমি। নামটা সুভদ্র শোভন। প্রায়ই মনে হয় উল্লেখযোগ্য কোন ঘটনার স্মৃতি ছাড়াই মাঝবয়েসে পৌঁছে গেছি আমি। আমার যেন আগের কোন স্মৃতি নেই। আমার বয়েস একটা অঙ্কেই আটকে ছিল সবসময়। রাইটার্স ব্লকে ভুগছি মাসখানেক হল। কিবোর্ডে ঝড়তোলা লেখকের হাতে যেন মরচে ধরা দরজার মত স্থবিরতা। তাই মানুষ খুঁজি আমি-মানুষের অনুভূতির চেয়ে ভাল গল্প আর জমে না বুঝি।

রোজ আসি এই রেস্টুরেন্টে। মুখোমুখি দুটো টেবিলে বসা দুজন মানুষকে আমি দেখি রোজ। আমি মানুষ দেখতে ভালবাসি। কত কত মানুষ -অদ্ভুত সব মন তাদের-অদ্ভুত তাদের গড়ন। আমি প্রায়ই দেখি রোজ দুপুরের আগের সময়টায় একজন সুদর্শন যুবক হলুদ গোলাপ পাঠায় উলটো দিকের টেবিলে বসে থাকা চশমাচোখের এক মোহনীয়াকে। মেয়েটির নাম জেনেছি কেবল। তার বান্ধবী এসেছিল একবার সাথে। রিন্তি বলে ডেকেছিল। আরো দেখি মেয়েটি ক্যাফে থেকে বেরুবার পথে হোঁচট খায় ছেলেটির সামনে। ছেলেটি কিছু বলে না। আমি এতদিন কিছু বলতে শুনিনি তাকে। মেয়েটি গোলাপ নেয় না বলে ছেলেটি রোজ ফিরিয়ে নিয়ে যায়। আমি দূর থেকে যেন গোলাপের সুবাস পাই। জেনেছি ছেলেটি শুনতে পেলেও বলতে পারে না। কারণ জানি না। আর মেয়েটির সুন্দর চোখজোড়া ভুগছে ক্ষীণদৃষ্টিতে। শেষটা কী হল আমি জানি না। কারণ নতুন জায়গা ডাকছে আমার বোহেমিয়ান জিনকে। তবে নতুন গল্পের প্লট পেয়ে গেছি।

আমার গল্পের শেষটায় না বলতে পারা ছেলেটিকে আর হলুদ গোলাপ ফিরিয়ে নিতে হবে না। মেয়েটি গোলাপ হাতে পড়ে যেতে নিলে ছেলেটির শক্ত হাত তাকে ধরে ফেলবে। তারা এক আকাশের নিচে বসে একজন দেখবে চাঁদকে আর অন্যজন শুনবে জোছনার আকুতি।

উপসংহার

আমার আজ ভীষণ মন খারাপ। আমার নামের মতোই আমার অনুভূতিরও সীমানা আছে। আমি রোজ একটা হলুদ গোলাপের অপেক্ষায় থাকতাম। গতকাল হয়ত পৃথিবীর সবচেয়ে মন খারাপ করা দিন ছিল যা হতে পারত উল্টোটা। হয়নি। আমার অপেক্ষার মানুষের হাতের হলুদ গোলাপ ছিল অন্য কারো হাতে। সাথে ছিল অনেকগুলো লাল গোলাপ। আমি মেনে নিয়েছি আগে থেকে লেখা গল্পের উপসংহারে আমার হলুদ গোলাপ পাবার কথা ছিল না। আজ পৃথিবীর সব ফুলে দুঃখ নেমেছে। আমি চোখভর্তি হলুদ গোলাপ দেখছি। সে গোলাপে জমছে শিশিরের মত অশ্রু…

( একটা হলুদ গোলাপ,২৫ পৌষ ১৪২৮)