সুবীর সরকার এর কবিতা

132

নুন

এভাবেই নুন লিখি,নুন সাবানের কথা লিখি
মৃত্যু আসলে বলখেলার মাঠ।রাস্তা খুঁজে পাচ্ছ না
তুমি
এভাবেই গ্রামদেশে, কাত হয়ে পড়ে থাকা রেডিও

ম্যাজিক

ভাঙা হাটে গান বাজলে ফিরে আসে ম্যাজিক
সেই জোড়া মহিষ।
অনন্তের সব মানুষজন।
পথে পথে পর্যটক পেতে রাখে ফাঁদ

বরফকল

যেখানেই যাও তোমাকে স্বাগত জানাবে দু চারটে ইঁদুর।বরফকল থেকে ফিরে এসে তুমি দেখতে পাবে
নদীর ওপর দীর্ঘতম এক সেতু।সেজে ওঠা
হলঘরে তুমি শুরু করবে নুতন এক ইনিংস।

মহড়াকক্ষ

হাওয়া বাতাসের এই মহড়াকক্ষে স্থির হয়ে থাকে সময়।ছেঁড়া মাদুরের পাশে বসে থাকা বেড়ালের
থাবায় আরশোলা ধরা থাকলেও দৃশ্য থেকে বেরিয়ে
আসে নুতন দৃশ্য,যেখানে ভরা শ্রাবণের মেঘের বিস্তার

মিছিল

ভাঙা হাটে যখন মিছিল ঢোকে তখন চরাচর জুড়ে বৃষ্টি।এলিজি লিখতে গিয়ে কলমের কালি ফুরিয়ে যায়।ফুরিয়ে যাওয়া বিকেল যে আলো রেখে যায়
সেই আলোয় আমরা লিখতে শুরু করি ইতিহাস

কলোনি

কলোনির রাস্তায় বাঘ ডেকেছিল
কলোনির রাস্তায় ছিটকে এসেছিল হরিণ
এসব গল্পের আশ্চর্য এক জাদু থাকে
কলোনির রাস্তায় নদী ঢুকে পড়ে

ম্যাজিক

নাচ থামিয়ে দেওয়া সেই ম্যাজিশিয়ান
একদিন চুপিচুপি চলে আসেন গানবাজনার দেশে
সারারাত জোকারের হাসি
সারারাত ট্রাপিজের খেলা

খোঁপা

তোমার খোঁপায় আমি গমখেতের মায়া দেখতে পাই
খোঁপা থেকে খসে পড়েন হাসন রাজা।
নদীর বাঁকে বাঁকে রেখে আসো খোঁপা বাঁধবার গান
তোমার খোঁপার দিকে তাকিয়ে থাকে শান্ত বেড়াল

জীবন

আমাদের জীবনে একটা দীর্ঘ ভূমিকা খুব জরুরি
যেমন হত্যাকাণ্ডের আগে কয়েক গ্লাস জল
কিনে নিচ্ছি জল জঙ্গল জনপদ।
মানচিত্রের গায়ে হেলান দেয় ম্লান আলো
আমরা ফুরিয়ে যাই।
আর চারপাশে কথা
ওড়ে।

দুপুর

নদী দেখে ভয় পাই।এদিকে অন্ধ কুকুর স্নান সারছে।
আলো কমে আসলে জঙ্গল ক্রমে ভয়ার্ত হয়ে
ওঠে
মার্বেল খেলার মাঠে বসে থাকা ভরা
দুপুর।
গানের মত এক জীবনে আছড়ে পড়ে গাঙের
ঢেউ।
তারপর রাস্তা হারিয়ে ফেলে বাঁশি শুনি

স্মৃতি

বাথানের মহিষ কে ঘাস খাওয়াব বলে উন্মাদের
মত ছুটে গিয়েছিলাম।
আলো হারানো ভোরের ভেতর ডুবে গিয়ে
পুরোন কান্নার স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে গিয়ে
আশরীর কেঁপে কেঁপে উঠি।
জীবন ও যাপনের ভেতরে গান বাজে
ফুটো হয়ে যাওয়া নৌকো থেকে লাফিয়ে নামে
মস্ত সওদাগর
সহসা বাদ্য শুনে উড়ে যায় সীমান্তের পাখি
শুন দুপুর, বাঁশ পাতা আর হরিণ নিয়ে আমাদের
আলোচনাসভা
পথে পা রাখি আর পথ সংক্ষিপ্ত হয়।
বিপণী তে বিক্রি হচ্ছে ভাঙা চশমা
চৌরাস্তায় পৌঁছে দেখি কলোনির মাঠে হুডখোলা
জিপ ঢোকে

বিকেলতাঁবু

বিকেলতাঁবুর মাথায় নীল রঙের মেঘ
নর্তকী খুঁজছেন পটেটো চিপস
জংশন এ দাড়িয়ে সিটি দিচ্ছে মেইল
ট্রেন
ঘাসের বিছানায় এখন ডাম্পিং গ্রাউন্ড
মনখারাপ মুছে ফেলে আমরা রুমাল ওড়াই

গান

ভুলে থাকি স্বাভাবিক জীবন।
শালিকের ভেজা ডানা আর দূরাগত মেঘের
ছায়ায় চিনে নিতে থাকা পথ ঘাট
স্মৃতি থেকে যে গান উঠে এল
নৌকো আর নদী আস্ত এক ফ্রেম
পাল্টানো শহরের ডাকবাক্স থেকে কুড়িয়ে আনতে
থাকা চিঠি
আর স্থির হয়ে থাকা পুকুরের জল।
আর প্রমাণ ছাড়াই অভিযোগপত্র লিখি
আমরা।

চাঁদ

সাজানো থাকে আপেলগুচ্ছ চাঁদ পিয়ানো
বাতিল ঘড়ির বেল্ট থেকে বরফ গড়াতে থাকে
ভাঙা থালায় ভাত খাচ্ছি।
উনুন থেকে কিছুটা দূরে বৃষ্টি এসে থামে
পানকৌড়ি দেখি,নিরালায় মহিষ
আলো কমে আসছে আমাদের পৃথিবীতে

গিটার

আপেল খেতে খেতে ঢুকে পড়ি কনফারেন্স রুমে
ধাক্কা খাওয়ার আগে দেখে নিতে থাকি
রুমাল ও পিচকারি
বোতাম ছিঁড়ে যাওয়া জামা।
হলুদ বেড়ালের থাবা।
চিত হয়ে শুয়ে আকাশ দেখি।
ফিসফিস শব্দের ভেতর গিটার
নামছে