‘দূরের হাওয়া’ বই থেকে ওয়ালেস স্টিভেন্সের কবিতা

330

একটি কালো পাখি দেখার তেরোটি উপায়

১.
তুষারঢাকা কুড়িটি পর্বতে
একটিমাত্র সচল বস্তু
ছিল ওই কালো পাখিটির চোখ।
২.
গাছের মতো আমারও ছিল
তিনখানা মন,
তাদের ভেতরে রয়েছে তিনটে কালোবরণ পাখি।
৩.
কালো পাখিটি শরৎ-হাওয়ায় তুললো ঘূর্ণিপাক।
মূকাভিনয়ের ছোটোখাটো এক অংশ ছিল তা।
৪.
এক নারী আর একটি পুরুষ
অভিন্ন তারা ।
এক নারী আর একটি পুরুষ এবং একটি কালোবরণ পাখি
এরা সবাই এক।
৫.
কোনটা আমি বেছে নেব জানা নেই,
অবকুঞ্চনের সুন্দরতা
নাকি ওইসব বক্রোক্তির শোভা,
কালো পাখিটা শিস বাজাচ্ছে
অথবা ঠিক পরমুহূর্তে।
৬.
অশোভন যতো কাচে আর কাচে
সূচীমুখ বরফেরা জানালাটা করেছে ছয়লাপ।
কালো পাখিটার ছায়াটি একে,
এদিক-ওদিক, পেরোল বারংবার।
মেজাজ পেয়েছে
ছায়ার ভেতরে অবোধগম্য
একটি কারণ খুঁজে।
৭.
হাদ্দাম শহরের ওহে, কৃশকায় মরদেরা,
সোনার বরণ পাখিকে তোমরা কেন করো কল্পনা?
চারপাশে কি দেখতে পাও না
কালো পাখিটা কেমন ক’রে
রমণীদের চরণ ঘিরে হাটে?
৮.
আমি ঢের জানি বনেদি উচ্চারণ
আর প্রাঞ্জল, এড়ানো-যায় না এমন সুস্বর;
তবু এ-ও জানি
আমি যা-ই জানি তাতে
কালো পাখিটা জড়িত পূর্বাপর।
৯.
দৃষ্টিসীমার বাইরে যখনই কালো পাখি উড়ে গেল,
অনেকগুলো বৃত্ত থেকে সে একটির
সীমানাকে করলো চিহ্নিত।
১০.
হরিৎ আলোয় কালো পাখিদের
উড়তে দেখে এমনকি ওই
মধুর ধ্বনির বেশ্যারা সব
তুলবে তীক্ষ্ণ, উতল কলরব।
১১.
একটি কাচের ঘোড়ার গাড়ি চেপে
কানেক্‌টিকাট পেরোল উড়ে উড়ে।
একদা তাকে এফোঁড়-ওফোঁড় করেছিল্ এক ভয়,
তাতেই সে তার হাতের যন্ত্রটির
ছায়াটিকে ভুল করে
ভেবেছিল, বুঝি্ কালো পাখি এরা সব।
১২.
নদীটা চলেছে বয়ে
নিশ্চয় কালো পাখিটা চলেছে উড়ে।
১৩.
সন্ধ্যা ছিল সারাটা বিকেলজুড়ে।
তখন তুষার পড়ছিল ঝরে, আর
তুষার-পতন শুরু হবে এইবার।
সিডারগাছের অঙ্গে অঙ্গে
কালো পাখিটা বসেছিল জম্পেশ।

(Thirteen Ways Of Looking At A Blackbird
by Wallace Stevens)

অনি/সিনেটিভি