অদৃশ্য বুনো বেড়াল
জলের দামে জীবন পোহাতে রাত খরচ করে যে
নারী, বহু রোদ্দুর পথ পাড়ি দিয়ে তার –
অস্তিত্ব ছুঁয়েছি।
প্রবাহমান রাত্রিসঙ্গমে জানতে চেয়েছি
বীজের মধ্য থেকে কীভাবে
জন্ম নেয় অরণ্য
জলকণা থেকে নভোনীল সাগর!
শিশির নিঃসৃত ভোরে খুব কাছে থেকে –
দেখেছি,
পণ্যজাত বাজার
রাত্রিখোর জোনাকের উৎসব,
অল্পমূল্যে বিক্রিত মাছের নগ্ন দেহ।
অতঃপর,
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দেখি…
আড়ালে ওত পেতে আছে অদৃশ্য বুনো বেড়াল।
আমি সেই প্রেম
আমি সেই প্রেম, অনাদর অবহেলায় পড়ে থাকা
বেদনার প্রচ্ছদ। তুচ্ছ তাচ্ছিল্যে বেড়ে উঠা –
করুণ কাঙাল।
দীর্ঘবছর
প্রণয়ের খরা বুকে
অনিদ্রায় পুড়ে পুড়ে হয়েছি –
উজ্জ্বল, বিবাগী বাউল সেঁজেছি বিষণ্ণ দুপুরে…
আমি সেই প্রেম
ব্যথার প্রবালে গড়া বেদনার ভূমি
আমাকে আরো ব্যথিত করো, কদর্য করো,
ভর্ৎসনা করো, নির্বাসিত করো বেদনার অরণ্যে…
দূরত্ব
তোমার সাথে আমার বিস্তর পার্থক্য
আমি ভূমি তুমি শূন্য, তুমি কবি
আমি কবিতায় রোয়িত শব্দ
যেমন ইচ্ছা করলেই –
পৃথক করা যায়,
বর্ণ –
বিয়োগে
নিঃশেষ করা যায় জন্মের অধিকার।
তোমার –
সাথে আমার বিস্তর দূরত্ব, যেনো
তুমি আছো, আর আমি কোথাও নাই।
মাছরাঙা
জলের ভেতর অস্তিত্ব রেখে গর্ভেই পার করেছি
সুদীর্ঘ অমবষ্যা, চন্দ্রগ্রহন।
প্রসব যন্ত্রণা ভুলিয়ে আনন্দ প্রসূত করে
এমনই এক চিৎকার, এবং পৃথিবীর
সকল সুরের চেয়ে মেদুর –
বেদনায়,
নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি ভোরের উঠোনে।
অতঃপর, বিচূর্ণ আমাকে কুঁড়োতে চেয়ে
বহুদূর পথ হেঁটেছি সময় সৈকতে
মর্ত্যের বালুচরে…
শ্মশান –
সন্ধ্যায় মগড়ার উপকূলে
স্মৃতির খড়িকাঠ, হাড়ের কয়লা পেয়েছি খুঁজে
আর, ছাইগুলো উড়ে গেছে বাতাসের পথ ধরে
গভীর অন্ধকারে, যতোটা গভীরে গেলে
গভীরতা যায় হারিয়ে…
যার অতলে ডুবে আছে এক মাছরাঙা জীবন।