আদেশ ও অবাধ্যতা নিয়ে মিথোলোজী: হাসিদা মুন

1154

যেমনভাবে আমরা আমাদের দেখতে চাই, কল্পনা করি, ইমাজিন করি। একটি পরিণত বয়সে, যখন নিয়মিত পরিবার শুরু হয়,তখন থেকে সপ্তাহের সাতদিনই, প্রতিটি দিন বৈরাগ্য আমাদের নিত্য সঙ্গী। দৈহিক, আবেগজনিত মানসিক চাহিদা ও পীড়ন ছাড়া কারো সঙ্গে যোগাযোগ হয় না,একাই কাটে, নিজের ভাবনায়।ভাবনাগুলো অধিকাংশ সময় ইন্দ্রলোকের বা তলাতলের পাতালে অগ্নি দাহে অথবা নিয়মিত দাসত্ব নিজের বা অপরের। বর্তমান তখন থাকে না,মেমোরীর জলধারায় দুই তীর ভবিষ্যতের পাড়ে বাঁধা , জোয়ার-ভাটার তীর কাছে দূরে সরে। নিয়মিত দাসত্ব বর্তমানকে টিকিয়ে রাখে। কিন্তু মিথোলজিতে আমাদের এলার্জি হয়। গোত্র,সম্প্রদায়, জাতি বিবেচনায় সহ্য হয় না, নইলে চরম অবজ্ঞা করি। তবে মিথোলোজীর কোন অংশ যখন গাণিতিক ভাষায়, পদার্থের সমীকরণে, রসায়নের দুর্বোধ্য ক্রিয়া – প্রতিক্রিয়ায় আমাদের জীবনে সুবিধা এনে দেয়, তখন এগুলোকে প্রযুক্তি বলি। তখন এটি বিজ্ঞান, উন্নত সভ্যতা।
কোন হাইপোথিসিস যখন দৃশ্যমান অনুভবে আনা হয়,তখন বিজ্ঞান বা কার্যকর বিষয় –নইলে সেটা মিথোলোজী।
সিনেমা হলে সিনেমা যে দেখে নাই। তাকে কোন ভাবে বুঝানো যাবে না, আলোর রশ্মির ভেতরে নায়ক – নায়িকার প্রেম চলে,গান,ভালোলাগা,ভালোবাসা, পরিণতি, শহর -বন্দর, প্রাম-গঞ্জ,মারামারি – প্রতিশোধ, ভালো-মন্দের যুদ্ধ সব সেলুলয়েডে তখন বলবে মিথ, কিন্তু একবার সিনেমা হলে ঢুকলে তখন প্রযুক্তি, মিথ আর থাকে না।
একদশক আগেও উপার্জনে সন্তান যখন বিদেশে, দীর্ঘ অপেক্ষায় থাকতে হতো পরিবারকে। এখন বিশ্বের যে কোন স্থান থেকে ভিডিও কল করছে প্রতি মুহূর্ত যখন ইচ্ছে করে। জটিল বেতার তরঙ্গ, তড়িৎ চৌম্বকীয় বল,নেটওয়ার্ক, কোডিং, ডিকোডিং, কিছুই জানার প্রয়োজন ইচ্ছে হয় না, কারণ ইউজার ফ্রেন্ডলী।
ফেসবুকে দিনের বিশেষ ঘটনা বা মনের চিন্তা ঝেড়ে দিচ্ছে মুহুর্তেই ছড়িয়ে যাচ্ছে আকাশে –বাতাসে। নবী সোলায়মান (আঃ) এর মুজেযা যথাযথ কার্যকর করছে হয়ত রেফারেন্স দাঁড় করানোর সময় নেই। সবই ইউজার ফ্রেন্ডলী, যতটুকু জানি ততটুকু দিয়েই বিশ্বায়নে অংশগ্রহণ করা ।
অনুভব করা কঠিন, তারচেয়ে কঠিন কিছু বিষয়ে চিন্তা করা, প্রযুক্তি যে আদেশ ও অবাধ্যের ফসল,
নতুন আদেশে জীবনের মান বৃদ্ধি পায় তা সহজে বোধগম্য হয়। শিশু -কিশোরদের মানবীয় হতে লোক সাহিত্যে প্রতিটি জনপদে প্রচলিত মিথোলজি রয়েছে। বিজ্ঞানের দর্শন গড়ে উঠার একমাত্র উৎস মিথোলজি, অনেকেই বিতর্ক করবেন, তবে ভাবতে পারলে চিন্তার মিষ্টতা অনুভব হতো। বিজ্ঞানের নিয়মিত স্তর উত্তরণের কিছু গল্প , বিশ্বাসের জন্য নয়,মিলিয়ে নিতে মিথের সাথে, আমাদের জীবন গাঁথা, সৃষ্টি – ধ্বংস, সঞ্চালন, সন্তোলন, বিনাশ, পুনঃজাগরণ,ভক্তি, লোভ বরদান,মাল,মতি,নেতৃত্ব, পরিবার,জীবন, উদ্দেশ্য, উদ্বেগ, সমাপ্ত আরম্ভ একবার পরখ করে দেখা যেতে পারে,বিশ্বাসের জন্য নয়। সত্য বলে নম্বর পেতে নয়,সত্য অনুভবের, উপলব্ধির,চিন্তার অতঃপর অভিজ্ঞতার।
তারা বলবে, আমরা সত্যে বিশ্বাস স্থাপন করলাম। কিন্তু তারা এত দূরে থেকে তার নাগাল পাবে কেমন করে?
তারা পুর্ব থেকেই সত্যকে অস্বীকার করেছিল। সত্য হতে দূরে থেকে অজ্ঞাত বিষয়ের উপর মন্তব্য করতো। তাদের ও তাদের বাসনার মধ্যে অন্তরাল হয়ে গেছে, তাদের পূর্বের সতীর্থদের সঙ্গে তাই করা হয়েছিল। বিভ্রান্তিকর সন্দেহে ছিল, কিতাব তেমন করেই বলে । সন্দেহ কেবল দূর হচ্ছে এনার্জির আবশ্যকীয়তা নিয়ে। যা আমাদের চতুর্দিকে ঘিরে আমাদের নিরাপদে রেখেছে, নিরাপত্তা দিচ্ছে। যা ব্যবহার করছি পরিবহনে, ঘরে আলো জ্বালাতে,জীবন ধারণে যা জরুরি। খাবার না খেলে,এনার্জি না নিলে, আমরা নিস্তেজ হয়ে মরে যাবো। তাহলে এই এনার্জি কি? কেন এত উপকারী। বিজ্ঞানীরা অদ্ভুত থিওরী দিয়ে সমীকরণ দেখিয়ে উপস্থাপন করেছেন যা,এমন শক্তির অস্তিত্ব যা দিয়ে ইঞ্জিন, মানবদেহ ও তারকা সমুহের প্রকৃতি একসঙ্গে লিঙ্ক করে দেন। বুঝিয়ে দেন এনার্জির প্রতিদিনকার প্রয়োজনীয়তা, সেন্স করতে পরিপূর্ণ ব্রহ্মান্ডকে।তারা কিছু সেট অব রুলস নিয়ে বলেন যা আমাদের ব্রহ্মান্ডকে ড্রাইভ করছে। এটি এমন গল্প গাঁথা যা বুঝতে শেখায় সকল ধরনের এনার্জির ফর্ম নিশ্চিত বিলুপ্ত হবে এবং বিনষ্ট হবে সন্তোলন রাখতে অর্ডার থেকে ডিসঅর্ডারে।
থিওরীগুলো এই পদ্ধতিটি ব্রহ্মান্ডে কেমন করে সঞ্চালন করছে। যা আমরা দৃশ্যত দেখি চতুর্পার্শ্বে প্রকৃতি থেকে ছেকে এনার্জির প্রকাশ কিছু সাংকেতিক চিহ্নে আটকে ব্যবহার হচ্ছে নিত্য দিন। বাগানের ফল থেকে, গাছের লাকড়ি জ্বালিয়ে, বা পানিতে নৌকা চালাতে বা পানি তুলতে চাকা ঘুরিয়ে সর্বত্র এনার্জি ব্যবহারেই ক্রিয়াশীল। মাত্র তিনশত বছর আগে মনুষ্য যন্ত্র আবিষ্কার করে। যেগুলো সামর্থ্যবান শক্তির উপাসনা করে এনার্জি প্রস্তুতকরণে। পূর্বে যেগুলো মিথোলজি মনে হতো নানান জাতি নানান রং-এর মানুষের ফোটা ফোটা ত্যাগে জমে উঠেছে এখনকার যন্ত্রচালিত এনার্জি ব্যবহার তবে গল্পের শুরুতে একজন। যিনি সাহস করেছিলেন এনার্জি বুঝতে গটফ্রিড লাইবনেজ (১৬৪৬-১৭১৬)ডিপলোমেট, বিজ্ঞানী, দার্শনিক এবং জিনিয়াস, জানতে চেয়েছিলেন মেকানিজমটি কি যা ব্রাহ্মান্ডকে সচল রাখে? সে সময় সাময়িক অন্যদের মত করে বিশ্বাস করতো, ব্রহ্মান্ড ডিজাইন হয়েছে কোন পরাক্রমশালী, অসম্ভব ক্ষমতাধর সৃষ্টিকর্তার হাতে। তার মতে যদি জানা যায় মেশিন কেমন করে চলে, তাহলে সামর্থ্য হতে বুঝতে প্রিন্সিপাল গুলো যা দিয়ে ব্রহ্মান্ড সৃষ্টি হয়েছে। সীমাহীন প্রজ্ঞা, একহাতে থিওলোজি ও ফিলোসোফি নিয়ে অন্য হাতে ইঞ্জিন ও মেকানিক্স নিয়ে বুঝতে শুরু করেন। ঠিক তেমন করেই ফিলোসোফিক্যাল প্রশ্ন জেগে উঠে কি হয় যখন অবজেক্ট সংঘর্ষ করে? তুলে নেন প্রজ্ঞা,প্রতিটি অবজেক্টের মুভমেন্ট অন্যটিতে ট্রান্সফার হয়? এটি এমন যেন কিছু একটি দুটি বস্তুর সংঘর্ষে ছড়িয়ে গেল। যার নামকরণ করেন লিভিং ফোর্স যা ফিজিক্যাল সাবস্টেন্স হিসাবে এক্সচেইঞ্জ হয় যখন সংঘর্ষ হয়। তিনি বলেন ব্রহ্মান্ড একটি জীবন্ত মেশিন। যা ভেতরে আনুপাতিকভাবে লিভিং ফোর্স রয়েছে। যেখানে স্বয়ং খোদার উপস্থিতি হিসাবে আভাস করেন। এই এনার্জিটি নিয়মিত প্রিজার্ব করে রাখা হবে।