শুভ জন্মদিন অপর্ণা সেন

311

অজয় দাশগুপ্ত

ছবি’র শুরুটাই দুর্গাপূজা দিয়ে। বনেদী বাড়ীর পূজায় একে একে দেশও প্রবাসের আত্মীয় পরিজন এসে ভীড় করলো। বাড়ীর কোণায় কোণায় প্রেম ভালোবাসা গোপন চাওয়ার এক ফাঁকে বাড়ীর মাঝবয়সী গৃহিণীও মজে গেলেন তার চেয়ে বয়সে ছোট শৌখিন ক্যামেরা ম্যানের ভালোবাসায়। অবাক বিস্ময়ে দেখলাম, সাবালিকা হয়ে উঠছে বাংলা ছায়াছবি।

মধ্যবয়সী রাখী, যৌবনের শুরুতে অমিতাভের বাহুবন্দী দেখেছিলাম কভি কভি ছবিতে। সেই রাখী অনায়াসে চুমু খেলেন, মা হয়ে উঠলেন পরমা।

এমন ছবি আপনার হাতেই সম্ভব। ৩৬ চৌরঙ্গী লেইন দেখেছিলাম চট্টগ্রামের ভারতীয় সহকারী দূতাবাসের সৌজন্যে। মাঠে শুয়ে বসে দেখা জেনিফার কাপুর এখন পৃথিবীতে নাই বটে, রয়ে গেছেন অামাদের মনে। এও আপনার কৃতিত্ব।

মেধা’র শুরু হয়েছিল মেধাবীর হাতে। সত্যজিত রায়ের তিন কন্যার পর রোমাঞ্চ, ভালোবাসা, বিনোদন সব মিলিয়ে ওঠানামার অভিনয় জগত। আপনি সুচিত্রা সেনের মতো জনপ্রিয় কিংবা পর্দাজয়ী নায়িকা হয়তো নন, কিন্তু আমাদের হার্ট থ্রব। সুচিত্রা পরবর্তী তারুণ্যে খোলা পিঠ, ঈষৎ স্তনের আভা আর মোহনীয় চাউনী আপনিই আমাদের স্পন্দন।

যেখানে আপনার স্পর্শ সেখানটাই সজীব। ইন্টেলকচুয়ালিটির অনন্য উদাহরণ সানন্দা। যতোদিন আপনার সম্পাদনায় ছিলো ততোদিন এক তাজা গোলাপ। যে মুহূর্তে আপনি ছেড়ে দিলেন সানন্দা ধীরে ধীরে একটি সিনে ম্যাগাজিন ছাড়া আর কিছুই হতে পারলো না। এখন উল্টে দেখারও রুচি জাগায় না এই সাময়িকী।

এই সেদিন ও মা মেয়ে এক নায়ক এক পুরুষের প্রেমের ছবিতে মন ভিজিয়ে দিয়েছেন আমাদের। মেঘ পিয়নের ব্যাগের ভেতর মন খারাপের দিস্তা.. মন ব্যাকুল হলে আপনার জন্য এখনো তিস্তা প্রিয় নায়িকা।

নামটাও দুর্গার কাছ থেকে নেয়া অাপনার।শাস্ত্র বলে, পতিকে পাওয়ার জন্য মহাদেবের জন্য কঠিন ব্রত করেছিলেন উমা। এমন কঠিন যে, জোসনার কিরণ, ঝরে পড়া পাতা কিছুই স্পর্শ করবেন না। সেই যে পাতা মানে পর্ণ স্পর্শ না করার প্রতিজ্ঞা সেই থেকে দুর্গার আরেক নাম অপর্ণা।

বাংলায় জন্ম নেয়া আমাদের অপর্ণা আপনি। এই বয়সে স্বীকার করতে কোন লজ্জা নাই, আপনাকে দিয়েই ভালোবাসা ও কামনার শুরু।

শুভ জন্মদিন অপর্ণা সেন।

অনি/সিনেটিভি