কবির সুমনকে আমাদেরও কিছু বলার আছে

348

আহমাদ মোস্তফা কামাল

কবীর সুমনের শেষ ইচ্ছাপত্র দেখতে পাচ্ছি ফেসবুকে। জানি না এটা সত্যি কি না, আদতেই তিনি এগুলো বলেছেন কি না। যদি সত্যিই বলে থাকেন তাহলে এ নিয়ে আমাদেরও কিছু বলার আছে। তাঁর সঙ্গে আমার বাস্তবে বা ভার্চুয়ালি পরিচয় নেই, যোগাযোগও নেই। কারো যদি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে তাঁর কাছে এই কথাগুলো পৌঁছে দিন।

তাঁর অসুস্থতা কিংবা মৃত্যু-পরবর্তী সৎকারের বিষয়ে যা বলেছেন তা নিয়ে কিছু বলার নেই। তাঁর এই ইচ্ছেকে সম্মান জানাই। সম্পদ বা ব্যবহৃত জিনিসপত্রের ব্যাপারে তাঁর নির্দেশনাও মানা যায়। কিন্তু তিনি তাঁর গান, স্বরলিপি, পাণ্ডুলিপি ইত্যাদিও ধ্বংস করার কথা বলেছেন। না, এটা করা যাবে না। তাঁকে কেউ অনুগ্রহ করে জানিয়ে দিন, গানগুলো তাঁর সৃষ্টি বটে কিন্তু কেবলমাত্র তাঁরই সম্পদ নয়। এগুলোর মালিকানা আমাদেরও। তিনি গানগুলো সৃষ্টি করেছেন, আমরা সেগুলো গ্রহণ করেছি, ধারণ করেছি, প্রচার করেছি বলেই তিনি সুমন হয়ে উঠেছেন। এখন, এতদিন পর এসে, তিনি বলতে পারেন না যে, এগুলো কেবল তাঁরই এবং ধ্বংস করার অধিকার তাঁর আছে। না, নেই। তাঁর যেমন নেই, অন্য কোনো শিল্পীরও নেই। একজন শিল্পী (যে-কোনো শাখার) একা একাই শিল্পী হয়ে উঠতে পারেন না যদি তাঁর পাঠক-শ্রোতা-দর্শক-ভোক্তা না থাকে। শিল্পী হয়ে ওঠার এই পথ-পরিক্রমা আসলে এক যৌথ প্রয়াস। আইনত শিল্পীর সৃষ্টিকর্মের ওপর ভোক্তার কোনো অধিকার না থাকলেও নৈতিকভাবে আছে। সেই অধিকার থেকেই বলছি, আপনার এই ধ্বংসের নির্দেশনা আমরা মেনে নিতে রাজি নই।

অনি/সিনেটিভি