তিনি ছিলেন একজন উচ্চ শিক্ষিত এবং ধনী পরিবারের মেয়ে। কিন্তু জেনি বিয়ে করেন একজন উচ্চ শিক্ষিত ও সর্বহারা বিপ্লবীকে। এমনকি তাদের বিয়েতে জেনির পরিবারের সম্মতিও ছিল না!
সাম্যবাদের মহান জনক মার্কস নিজের পরিবারের ভরণপোষন ঠিকমতো করতে পারতেন না। তিনি মাঝে মাঝে প্রচন্ড হতাশ হতেন। এহেন অবস্হায় জেনি জীবনের শেষদিন পর্যন্ত কার্ল মাক্স-এর সঙ্গে কাটিয়েছেন! প্রচন্ড অভাবে যখন মার্ক্স তাঁর শরীরের কোট-টি পর্যন্ত বিক্রী করতে বাধ্য হয়েছেন তখনও জেনি তাঁর সঙ্গ ছেড়ে যান নি ,অভাবে অনটনে হারিয়েছেন নিজেদের পুত্র ,কন্যা তখনও জেনি কোনো অভিযোগ করেননি মার্ক্সকে l জেনি সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছেন। মার্কস সেই যে সাত সকালে ব্রিটিশ মিউজিয়ামে গিয়ে পড়ে থাকেন, সারা দিনমান তাঁর আর খোঁজ থাকে না।
চরম দুঃখ-কষ্টের সাথে জীবন অতিবাহিত করলেও জেনি সহযোদ্ধা মার্কসকে কোন অভিযোগ করেননি এবং নিঃস্বার্থভাবে ভালোবেসে গিয়েছিলেন সারাটাজীবন। আমরা যে মার্ক্সবাদের তত্ব বাস্তবে প্রয়োগ করে সমাজটাকে বদলাতে চাই ,মার্ক্স কোনোদিন সেই তত্ব পৃথিবীর মানুষকে উপহার দিতে পারতেন কি, যদি আজীবন জেনি সহযোগীতা না করতেন ?
পুঁজিবাদ মানসিকতা সম্পন্ন এই যুগে জেনির মতো যোগ্য সহযোদ্ধা কি আদৌ রয়েছে? 🙂
সমরেশ মজুমদার কালবেলা উপন্যাসে তাঁর নায়ক অনিমেষের মুখ দিয়ে বলিয়েছেন , “মাধবীলতার অপর নামই বিপ্লব” ৷
বিপ্লবীরাই প্রেমে পরে ,কারন তারাই জানে ভালবাসতে ,প্রেমের অপর নামই বিপ্লব ,ভালো না বাসলে বিপ্লবী হওয়া যায় না l বিপ্লব কে ভালোবাসি বোলে , নিজের যা কিছু ব্যাক্তিগত সব ছেড়ে আজ জলন্ত আগুনে ঝাঁপ দিয়েছি! হয়তো পুড়ে খাক হব! কিন্তু আমাদের ভবিষ্যৎ পাবে বিপ্লবের স্বাদ……
ভালবাসার জন্য শুধু একটা দিনই নয়,হতে হবে সারা জীবনের৷ সাধারণত আমরা দেখি একটা বয়স পর্যন্ত ভালবাসার তুমুল প্রবাহ চলতে থাকে।অন্যদিকে বয়স বেশী হলেই যেন সব শেষ হতে শুরু করে।শুধু মনেরই মিল নয় , মিল চাই মতাদর্শেরও।এক্ষেত্রে বিশ্বে দুই মহান মানুষের ক্ষেত্রে দেখা গেছে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত ভালবাসা অটুট। তাঁরা হলেন মহান কার্ল মার্কস ও জেনি ফন ভেস্টফালেন। দুই মহান মানুষের প্রতি রইলো এক আকাশ ভরা ভালবাসা ও শ্রদ্ধা।