আমাদের সবার প্রিয় একজন অভিনেতা ও নাট্য পরিচালক। নব্বইয়ের দশক থেকে বাংলাদেশের প্রথম সারির অভিনেতাদের একজন হিসেবে কাজ করছেন তিনি। টেলিভিশন ছাড়াও তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয়েও অসাধারন দক্ষতা দেখিয়েছেন। বিশেষ করে হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত “শ্রাবণ মেঘের দিনে” তার অভিনিত অন্যতম শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র। এই চলচ্চিত্রে মতি চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার অর্জন করেন। টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্রে বিভিন্ন ধারার চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি।
তবে দর্শকের কাছে তার অন্যান্য চরিত্রগুলোর পাশাপাশি কৌতুক চরিত্রগুলো বেশি প্রশংসনীয়। তার বিখ্যাত কৌতুক চরিত্র ছিল হুমায়ুন আহমেদ পরিচালিত টেলিফিল্মে মফিজ নামক একটি পাগলের চরিত্র।
তিনি স্কাউটের সাথেও যুক্ত ছিলেন। সেখানে তিনি অভিনয় করতেন। তিনি সিরাজগঞ্জ তরুণ সম্প্রদায় নাট্য দলে যোগ দেন এবং এই দলের সাথে উত্তর বঙ্গের বিভিন্ন স্থানে মঞ্চনাটকে অভিনয় করেন। সেসময় তিনি সাত পুরুষের ঋণ মঞ্চনাটকে নিয়মিত অভিনয় করেন। ১৯৮৪ সালে ১০ আগস্ট মঞ্চ নাটকটি বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত হয়।
১৯৮৬ সালে আবদুল লতিফ বাচ্চুর পরিচালনায় বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার যৌথ প্রযোজনার ‘বলবান’ ছায়াছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক হয় তিনি ১৯৯০ সালে টেলিভিশনে অভিনয় শুরু করেন। এর পূর্বে তিনি ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে অভিনয়ের অডিশন দেন। তার অভিনীত প্রথম টেলিভিশন নাটক ‘জীবন যেমন’। আলিমুজ্জামান দুলু প্রযোজিত নাটকটি ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত হয়। এই নাটকটি তার জীবনে রূপ পরিবর্তন করে দেয়। ১৯৯০ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোটগল্প সমাপ্তি অবলম্বনে নির্মিত সমাপ্তি টেলিফিল্মে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন। নাটকটির চিত্রনাট্য রচনা করেছিলেন অভিনেত্রী সুবর্না মুস্তফা ।
হুমায়ুন আহমেদ পরিচালিত টেলিফিল্ম নক্ষত্রের রাত, মন্ত্রী মহোদয়ের আগমন, সমুদ্র বিলাস প্রাইভেট লিমিটেড, আজ রবিবার তাকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নিয়ে আসে।
অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি নাটক পরিচালনা করে থাকেন। তার পরিচালিত প্রথম মেগা ধারাবাহিক লাল নীল বেগুনি। তার পরিচালিত অন্যান্য টেলিভিশন ধারাবাহিকসমূহ হল ঘুঘুর বাসা, চোর কুটুরি, একা, ও ছন্নছাড়া। তার পরিচালিত টেলিভিশন নাটক ও টেলি ছবিসমূহ হল রুমঝুম, বোকা মানুষ, ব্যবধান, স্বপ্নের গ্রহ, অপু দ্য গ্রেট, প্রাইভেট ডিটেকটিভ ও বাউন্ডুলে এক্সপ্রেস।
তার বাবা ইলিয়াস উদ্দিন তালুকদার ছিলেন একজন কাস্টম কর্মকর্তা ও মা হামিদা বেগম ছিলেন একজন গৃহিণী। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে জাহিদ হাসান সবার ছোট। তিনি চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত সিরাজগঞ্জের হৈমবালা উচ্চ বালক বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন এবং পরের তিন বছর বেনাপোলের ইন্টার স্কুলে পড়ার পর পুনরায় সিরাজগঞ্জে ফিরে এসে সেখান থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেন।
জাহিদ হাসান মডেলকন্যা, চিরসবুজ সাদিয়া ইসলাম মৌ-এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। সুখী এই দম্পতির দুইটি সন্তান রয়েছে। মেয়ের নাম পুস্পিতা এবং ছেলের নাম পূর্ণ।জাহিদ হাসানের ‘পুস্পিতা প্রডাকশন লিমিটেড’ নামক একটি প্রযোজনা সংস্থা রয়েছে।
জাহিদ হাসান ১৯৬৭ সালের ৪ অক্টোবর সিরাজগঞ্জে তার নানার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন এবং আজ তার জন্মদিন🎂
শুভ জন্মদিন জাহিদ হাসান *
*তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া, গুগল, ইউটিউব।
*ছবি সংগ্রহিত